• Sunrise At: 5:38 AM
  • Sunset At: 6:19 PM
info@talimeislam.com +88 01975539999

লা-হাওলা ওয়ালা-কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ-এর আমল

লা-হাওলাওয়ালা-কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ-এর আমল  (বেহেশতের রত্নভাণ্ডার) 

হযরত আবুহুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া ছাল্লাম আমাকে বলিয়াছেন- (লা- হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ্) বেশী-বেশী পাঠ কর। কারণ, ইহা জান্নাতের রত্নভাণ্ডার।

সুদানের বাসিন্দা, সিরিয়ার মুফতী, উচচ মাৰ্যদা সম্পন্ন তাবেঈ হযরত মাকহুল (রঃ) তাঁহার নিজের উক্তিতে বর্ণনা করিয়াছেন যে, যে ব্যক্তি  ‘লা-হাওলা-ওয়ালা-কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহি, লা মাজা মিনাল্লাহি ইল্লা ইলাইহি’ পাঠ  করিবে, আল্লাহপাক তাহার সত্তরটি অসুবিধা দূর করিয়া দিবেন। তন্মধ্যে সব চাইতে ছােট অসুবিধা হইল অভাব- অনটন বা আর্থিক দৈন্য ।

হযরত মােল্লা আলী কারী (রঃ) (মেরকাত ৫ম খন্ড, ১২১ পৃষ্ঠায়) লিখিয়াছেন যে, হযরত মাকহুলের এই বর্ণনাটি নাসাঈ শরীফে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম-এর বাণী রূপে বর্ণিত আছে এবং তিনি উক্ত দোআটির নিম্নরূপ অর্থও বাতলাইয়াছেন ঃ পাপাচার হইতে বাঁচার কোন উপায় নাই। আল্লাহপাকের সাহায্য ছাড়া এবং সৎ ও নেক কাজেরও কোন শক্তি নাই আল্লাহপাকের তওফীক ব্যতীত। এবং আল্লাহর আযাব-গযব ও রােষানল হইতে রক্ষা পাওয়ার মত কোন আশ্রয় নাই তাহারই রহমত ও সন্তুষ্টির দিকে ধাবিত হওয়া ব্যতীত।

লা-হাওলার চারিটি ফায়দা ও ফযীলত

১- ‘লা-হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ কালেমাটি আরশের নীচে অবস্থিত জান্নাতের একটি অমূল্য

রত্ন-ভাণ্ডার। আর জান্নাতের ছাদ হইল আল্লাহপাকের আরশ। ইহা পাঠ করিলে নেক আমল ও সৎকর্ম সমূহ অবলম্বন করার এবং পাপাচার হইতে বাঁচার তওফীক মিলিতে থাকে। এই অর্থেই ইহাকে জান্নাতের রত্নভাণ্ডার বলা হইয়াছে।

২- রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম বলিয়াছেন, লা-হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ্

(দুনিয়া ও আখেরাত সম্পর্কীয়) নিরানব্বইটি ব্যাধির ঔষধ, যাহাদের মধ্যে সর্বাধিক হালকা ব্যাধি হইল পেরেশানী (চাই তা দুনিয়া সম্পর্কিত হউক কিংবা আখেরাত সম্পর্কিত)। (মেরকাত, ৫ম খন্ড, ১২১ পৃষ্ঠা।)

৩- বান্দা যখন এই কালেমা পাঠ করে, আল্লাহপাক তাহার আরশ হইতে ফেরেশতাদিগকে সম্বােধন করিয়া বলেন, আমার বান্দাটি আমার অনুগত ও ফরমাবরদার হইয়া গিয়াছে, এবং অবাধ্যতা ও সীমালংঘন পরিহার করিয়া দিয়াছে।

একটি হাদীছ ঃ

হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, একদা হযরত রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম বলিলেন, (আবু হুরায়রাহ,) আমি কি তােমাকে এমন একটি কালেমা শিখাইয়া দিব না, যাহা আরশের নীচে অবস্থিত বেহেশতের একটি রত্নভাণ্ডার? তাহা হইল লা-হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ্। বান্দা যখন ইহা পাঠ করে, আল্লাহু তা’আলা ফেরেশতাদিগকে বলেন- আমার বান্দাটি অবাধ্যতা বর্জন করিয়া আমার অনুগত হইয়া গিয়াছে এবং তাহার সর্ব বিষয় আমার হাতে ন্যাস্ত করিয়া দিয়াছে । (মেরকাত্ ৫ম খন্ড, ১২১, ১২২ পৃষ্ঠা।) ইহা কি কম বড় নেআমত যে, বান্দা যমীনের উপর এই কালেমা পড়িতেছে, আর আল্লাহপাক তাহার আরশের উপর ফেরেশতাদের সম্মুখে তাহাকে স্মরণ করিতেছেন ?

৪- এই কালেমা শবে-মে’রাজে হযরত ইবরাহীম (আঃ) কর্তৃক প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ-মুস্তফা ছাল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়াছাল্লামকে প্রদত্ত ওসীয়ত ও উপঢৌকন । 

হাদীছ শরীফে আছে ঃ শবে-মেরাজে নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম ও হযরত ইবরাহীম (আঃ)-এর মধ্যে সাক্ষাক্কালে তিনি বলিয়াছিলেন ঃ হে মুহাম্মদ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লাম), আপনি আপনার উম্মতকে বলিবেন, তাহারা যেন লা-হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ দ্বারা ‘জান্নাতের বাগান’ বৃদ্ধি করিতে থাকে। (মেরকাত, ৫ম খন্ড, ১১১ পৃষ্ঠা।)

অতএব, ইহা পাঠে ইবরাহীমী ওসীয়তের উপর আমলের সৌভাগ্য ও প্রভূত কল্যাণ অর্জিত হইবে এবং

বেহেশতী বাগানও বৃদ্ধি প্রাপ্ত হইতে থাকিবে ।

প্রিয় নবীর হাদীছের ব্যাখ্যা স্বয়ং প্রিয় নবীর মুখে ঃ

এই হাদীসের একটি বৈশিষ্ট্য এই যে, স্বয়ং নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম স্বীয় পবিত্র যবানে ইহার ব্যাখ্যাও প্রদান করিয়াছেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম-এর দরবারে লা-হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ পাঠ করিলাম। তিনি বলিলেন, বলিতে পার ইহার অর্থ কি? আমি বলিলাম, আল্লাহ্ ও তাহার রাসূলই সর্বাধিক পরিজ্ঞাত। তিনি বলিলেন ঃ “লা-হাওলা আন মাছিয়াতিল্লাহ্, ওয়ালা কুওওয়াতা আলা-ত্বাআতিল্লাহ্ ইল্লা বি-আনিল্লাহ্” অর্থাৎ, আল্লাহর নাফরমানী হইতে বাঁচার কোন উপায় নাই এবং তাহার বন্দেগীরও কোন শক্তি নাই তাহারই মদদ ছাড়া । (মেরকাত্, ৫ম খন্ড, ১১১ পৃষ্ঠা।)

Lorem Ipsum

Designed by Mohd Nassir Uddin